প্রচ্ছদ > চাকরি সংবাদ >

সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরির সুযোগ, শুরুতেই বেতন ৪০ হাজার টাকা

article-img

কাজের সুযোগ : নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কন্ট্রোলার অব মেরিটাইম এডুকেশন (সিসি) ক্যাপ্টেন সাঈদ আহমেদ জানান, ডেক ও ইঞ্জিন নাবিক, স্টুয়ার্ট ও কুক নাবিক, ইলেকট্রিশিয়ান নাবিক ও ফিটার কাম ওয়েল্ডার নাবিক এই চারটি গ্রুপে ভর্তি ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এসটিসি আইএসও কনভেনশনের শর্তানুযারী ছয় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের নিয়মানুসারে এসটিসিডব্লিউর শর্তানুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের প্রি-সি রেটিং (নাবিক) সনদ নেওয়া হবে। সনদপ্রাপ্তির পর নৌপরিবহন অধিদপ্তরের শর্তানুযায়ী বেসরকারি মেরিটাইম প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট বা একাডেমিগুলো তাদের সমুদ্রগ্রামী পণ্য পরিবহন বা বাণিজ্যিক জাহাজে প্রশিক্ষণার্থীদের চাকরির সুযোগ করে দেবে। সরকারি ইনস্টিটিউট বা একাডেমিগুলোও দেশি-বিদেশি জাহাজ কম্পানিতে চাকরি পেতে সহযোগিতা করবে।

 


পদোন্নতি ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা : ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম-এর প্রধান সহকারী শাহজাহান মিয়া বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে ট্রেইনি রেটিং (নাবিক) বা সিম্যান হিসেবে জাহাজে যুক্ত হবেন। পর্যায়ক্রমে ডেক ও ইঞ্জিন বিষয়ে পদোন্নতি পেয়ে সর্বোচ্চ পদ ‘বুসান’ হওয়া যাবে। স্টুয়ার্ট ও কুক বিষয়ে সর্বোচ্চ পদ হেড স্টুয়ার্ট ও হেড কুক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ইলেকট্রিশিয়ান নাবিক ও ফিটার কাম ওয়েল্ডার বিষয়েও চিফ ইলেকট্রিশিয়ান ও চিফ ফিটার কাম ওয়েল্ডার হওয়া যাবে কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অনুযায়ী।

 


জাহাজে যোগ দেওয়ার পর শুরুতেই জাহাজ ও প্রতিষ্ঠানভেদে মাসিক বেতন হতে পারে ৪০-৫০ হাজার টাকা। শিক্ষানবিশ শেষে বেতন হবে প্রতিষ্ঠানভেদে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। পদোন্নতির পর সর্বোচ্চ পদগুলোতে মাসিক বেতন হতে পারে ১.৫ থেকে দুই লাখ বা তারও বেশি।

 

ভর্তির যোগ্যতা : সাধারণ প্রার্থীর বয়স ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ অনুযায়ী হতে হবে ১৬ থেকে ২৫ বছর।

 

ডিপ্লোমাধারী প্রার্থীদের বয়সসীমা ২০ থেকে ৩৫ বছর। নৌবাহিনীর প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়স ২০ থেকে ৪৫ বছর। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত চারটি গ্রুপের যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। গ্রুপ-১ (ডেক ও ইঞ্জিন নাবিক) ও গ্রুপ-২-এ (স্টুয়ার্ট ও কুক নাবিক) যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি বা সমমান পাস এবং কমপক্ষে জিপিএ ২.৫০ বা সমমান। গ্রুপ-৩-এ (ইলেকট্রিশিয়ান নাবিক) যোগ্যতা—কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিপ্লোমা অথবা এসএসসি বা সমমান পাসসহ দুই বছরের ট্রেড কোর্স; অথবা এই শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ নৌবাহিনীর ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কশপে ছয় মাসের প্রশিক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দুই বছরের অভিজ্ঞতা।

 

গ্রুপ-৪-এ (ফিটার কাম ওয়েল্ডার নাবিক) যোগ্যতা—কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মেরিন/মেকানিক্যাল/পাওয়ার/অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং; অথবা শিপ বিল্ডিংয়ে ডিপ্লোমা অথবা এসএসসি বা সমমান পাসসহ দুই বছরের ট্রেড কোর্স পাস; অথবা ন্যূনতম এসএসসি বা সমমানসহ বিটাক বা সমমানের প্রতিষ্ঠান থেকে ওয়েল্ডিং অথবা মেশিনশপে তিন মাসের প্রশিক্ষণ।
উচ্চতা ন্যূনতম ৫ ফুট ২ ইঞ্চি এবং ওজন ৪২-৬৭ কেজি। দৃষ্টিশক্তি—ডেক রেটিং কোর্সে ৬/৬ এবং অন্যান্য রেটিং কোর্সে ৬/১২। সব প্রার্থীকে কালার ব্লাইন্ডনেস হতে হবে।
  

 

অনলাইনে আবেদন : নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের (dos.gov.bd) মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদন জমার পর প্রার্থীদের দুটি পদ্ধতিতে যোগ্যতা মূল্যায়ন করা হবে—১. এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ, ২. ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর। ভর্তি পরীক্ষায় নির্ধারিত থাকবে ২০০ (১০০+১০০) নম্বর। এর মধ্যে এসএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ-এর ২০ গুণ নম্বর (সবোর্চ্চ ১০০) এবং এমসিকিউ পরীক্ষায় ১০০। এমসিকিউ পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্ন থাকবে, সময় ৯০ মিনিট। নম্বর বণ্টন—বাংলা ৩০, ইংরেজি ৩৫ এবং সাধারণ জ্ঞানে ৩৫ নম্বর।
 

আবাসন ও ফি : সরকারি ইনস্টিটিউট বা একাডেমিতে ভর্তির সুযোগ পেলে সব মিলে এক লাখ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। বেসরকারি ইনস্টিটিউট বা একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে সব মিলে খরচ হবে সাত লাখ থেকে আট লাখ টাকা।

 
কোথায় কত আসন : নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সরকারি মেরিটাইম প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম-এ ৬টি ট্রেডে ২০০ আসন, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, মাদারীপুর-এ ৬টি ট্রেডে ১০০ আসন। এ ছাড়া বেসরকারি ইনস্টিটিউটের মধ্যে মাস মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রাম-এ তিনটি ট্রেডে ৭০ জন, ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ট্রেনিং একাডেমি, ঢাকায় ৫টি ট্রেডে ৭০ জন, ওশেন মেরিটাইম একাডেমি, চট্টগ্রামে ৫টি ট্রেডে ৭০ জন এবং ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, নারায়নগঞ্জে ৩টি ট্রেডে ৬০ আসনে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।